সূর্যতামসী pdf বই কৌশিক মজুমদারের একটি ডিটেকটিভ উপন্যাস। বইটি ডাউনলোড করার আগে কিছু অংশ পড়ে নেওয়া যাক।
আমার জীবৎকালে ইহা প্রকাশ পাইবে না। এক গোপন স্থানে যোগ্য ব্যক্তির হস্তে এই পাণ্ডুলিপি লুক্কায়িত থাকিবে। কতদিন? তাহা একমাত্র মহাকালই জানেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কেহ বা কাহারা এই লিপির সন্ধান পাইয়া যদি পাঠ করেন, তবেই কলিকাতার অন্ধকারময় ইতিহাসের এক অজানা অধ্যায় তাঁহাদের সম্মুখে উন্মোচিত হইবে নচেৎ নহে। আমি অবশ্য সেই সময় ইংরাজ বাহাদুরের আইনের বাহিরে, টমসন সাহেবের আদেশের বাহিরে চিরশান্তির এক নিশ্চিত রাজত্বে অবস্থান করিব।
সূর্যতামসী pdf উপন্যাস
এবার কলকাতায় জাঁকালো ঠান্ডা পড়েছে। দিনের বেলাতেও আকাশ মেঘলা। একটু আগেই এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। সারাদিন সূর্যের দেখা নেই বললেই চলে। পাঁচটা বাজতে না বাজতে কুয়াশার পাতলা আস্তর গোটা শহরটাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলছে। আপার সার্কুলার রোডের একধারে মাঝে মাঝে বেশ কয়েকটা ময়লাবাহী রেলগাড়ি দাঁড়িয়ে। গত দুই তিনদিন যাবৎ কী এক কারণে তাদের ময়লা পরিষ্কার হয়নি। দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলা দায়। কিছুদিন আগে অবধি এই গাড়িতে করে ময়লা ধাপাতে নিয়ে যাওয়া হত। লোকে ঠাট্টা করে নাম দিয়েছিল “ধাপা মেল।” ইদানীং সে ব্যবস্থা বন্ধ। ফলে কাক, চিল, শকুনি আর হাড়গিলের উপদ্রবে আশেপাশের সব বাড়ির শার্সি সারা দিনরাত বন্ধ রাখতে হয়।
রাস্তার পশ্চিমদিকে প্রায় ছয় ফুট প্রশস্ত একটা কাঁচা ড্রেন। এই ড্রেন দিয়েই পাশের বাড়িগুলির পায়খানা, রান্নার জল বয়ে যায়। কেউ কেউ আবার এটাকেই পায়খানা হিসেবে ব্যবহার করে। আজ এই শীতসন্ধ্যায় সেই গন্ধ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। একটু এগিয়ে গেলেই যদু মিত্তিরদের বিরাট বাঁশঝাড় আর পগাড়। পগাড়ের পশ্চিমপাড়ে নারকেল আর তেঁতুলের সারি। কারা যেন সেখানে বসে নারকেল পাতা পুড়িয়ে আগুন পোহাচ্ছে। ওই পাড়ে পাকা বাড়ি আর নেই বললেই চলে। সব ঘুঁটে দেওয়া মেটে দেওয়ালের বাড়ি।
রাস্তায় দূরে দূরে গ্যাসবাতি। সন্ধ্যা হলেই পুরসভার মুটে বগলে মই নিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটে পথে পথে আলো জ্বালতে। মই বেয়ে ল্যাম্পপোস্টে উঠে প্রথমে ন্যাকড়া বুলিয়ে পরিষ্কার করে আলোর শেডের কাচ। তারপর চাবি ঘুরিয়ে চালু করে গ্যাস। সবশেষে দেশলাই জ্বালিয়ে বাতি ধরায়। কিন্তু তাতে আর কতটুকু আলো হয়? শুধু বাতির নিচটুকু আর আশপাশে সামান্য আলো ছড়ায়। এমন শীতের কুয়াশা ঢাকা সন্ধ্যায় এক অদ্ভুত হলদেটে চোখের মতো আলোগুলো জেগে থাকে। যেন সদ্য পিলেজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। রাতের পথ দিয়ে যারা হেঁটে যায়, তাদের আপাদমস্তক শালমুড়ি দেওয়া, যেন তারা এ মরজগতের কেউ নয়, প্রেতলোকের বাসিন্দা। খুব প্রয়োজন না থাকলে এমন রাতে কেউ বাড়ি থেকে বার হয় না।
কৌশিক মজুমদারের সূর্যতামসী pdf ডাউনলোড করুন (Surhatamosi pdf) এখান থেকে পড়ুন।