নারী শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে সংলাপ
অনুপা : আসসালামু আলাইকুম বন্ধু, কেমন আছো?
মনীষা : ওয়ালাইকুম সালাম। ভালো আছি। কিন্তু কী ব্যাপার? তোমাকে বেশ উত্তেজিত উত্তেজিত মনে হচ্ছে?
অনুপা : হ্যাঁ ঠিকই ধরেছো। পত্রিকা পড়ো নি?
মনীষা : কেন, পত্রিকায় কী লিখেছে?
অনুপা : একজন জ্ঞানপাপী ধর্ম-পণ্ডিত বিবৃতি দিয়েছে, মেয়েদের লেখাপড়ার দরকার নেই।
মনীষা : বলো কি? এরকম অজ্ঞ লোকও আজকাল আছে?
অনুপা : আছে, তিনি বলেছেন, মেয়েরা বাইরে আসলে না কি সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে।
মনীষা : মূর্খ আর কাকে বলে? অথচ প্রত্যেক ধর্মেই শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
অনুপা : হ্যাঁ তাই। আমাদের তো একটা বিখ্যাত হাদিসই আছে- জ্ঞান অর্জনের জন্য সুদূর চীনে যাও। এখানো তো বলা হয় নি জ্ঞান অর্জনের জন্য পুরুষরা চীনে যাও। নারী-পুরুষ সবার কথাই এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
মনীষা : তাছাড়া জ্ঞান অর্জন প্রত্যেকের জন্যই ফরজ।
অনুপা : সব ভাষার, সব ধর্মের প্রবক্তারাই সার্বজনীন শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বেগম রোকেয়ার ‘অর্ধাঙ্গী’ প্রবন্ধটি পড় নি? এখানে নারী শিক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত যুক্তিসহকারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
মনীষা : কী আছে ঐ প্রবন্ধে?
অনুপা : ঐ প্রবন্ধে বলা হয়েছে সমাজ হলো দুই চাকার গাড়ির মতো। এর একটি চাকা হলো পুরুষ আরেকটি হলো নারী। গাড়ির একটি চাকা ছোট এবং আরেকটি চাকা বড় হলে গাড়ি যেমন একই জায়গায় ঘুরতে থাকে, সামনে এগুতে পারে না; সমাজও তাই, নারী পুরুষ সমান না হলে সমাজ সামনের দিকে এগুতে পারে না।
মনীষা : চমৎকার ব্যাখ্যা। আসলে একটি দেশ, জাতি কিংবা সমাজের অগ্রগতির জন্য নারী পুরুষের সমান হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। সমাজের কিছু অপ শক্তি আছে, তারাই নারী শিক্ষার বিরোধিতা করতে পারে, অন্য কেউ নয়।
অনুপা : আমাদের এই অপশক্তি বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
মনীষা : ঠিক তাই, চলো এ বিষয়ে আমরা একটা সমাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি।
অনুপা : চলো। ধন্যবাদ।
মনীষা : ধন্যবাদ।