সহজে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করবেন যেভাবে

বর্তমান সময়ে টেলিগ্রাম চেনে না এমন মানুষ খুজে পাবেন না। কিন্তু টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করা যায় এ কথা অনেকেই জানে না। তাই, আজকে আমরা কীভাবে এখান থেকে সহজেই ইনকাম করতে পারবেন সে বিষয়ে আলোচনা করব।

টেলিগ্রাম থেকে টাকা আয় করার জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে, যেমন চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করে পেইড সাবস্ক্রিপশন চালু করা, স্পন্সরশিপ পোস্ট করা, অথবা প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা। এছাড়াও, আপনি নিজের ডিজিটাল পণ্য বা সেবা বিক্রি করেও ইনকাম করতে পারেন। টেলিগ্রামে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফলোয়ার তৈরি করে, আপনি এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ভালো উপার্জন করতে পারবেন।

সহজে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম পদ্ধতি 

১. রেফার করুন:

এরকম অনেক apps রয়েছে যেগুলো refer করার জন্য আমাদের টাকা দিয়ে থাকে।

তাই, যিহেতু আপনার telegram channel এর মধ্যে প্রচুর member রয়েছে, আপনি এরকম refer করার বদলে টাকা দেওয়া apps গুলোতে register করে নিজের referral link নিজের চ্যানেলে শেয়ার করতে পারেন।

যখন আপনার referral link ব্যবহার করে user রা সেই app install করবেন বা কিছু নির্ধারিত কাজ গুলো করবেন, তখন আপনি সেই app এর account এর মধ্যে নিজের referral income পেয়ে যাবেন।

বিভিন্ন android apps রয়েছে যেগুলো কেবল একটি referral install এর বিপরীতে প্রায় ১০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত দিয়ে দেয়।

২. মনিটাইজেশনের মাধ্যমে – টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম

টেলিগ্রাম চ্যানেল খুলে নিয়মিত ভিডিও, ব্লগ, লিংক ইত্যাদি কন্টেন্ট আপলোড করুন। চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১০০০ পৌঁছালে আপনি মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মনিটাইজেশন চালু হলে আপনার চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে, এবং সেই বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে Ton নামক ডিজিটাল কয়েনে ইনকাম হবে।
এই Ton সহজেই টাকায় রূপান্তর করে ব্যাংকের মাধ্যমে উত্তোলন করা যাবে। পরিশ্রম করলে মাসে প্রায় ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।

আরও পড়ুন  বুক রিভিউ লেখার নিয়ম বাংলা

৩. স্পন্সরশিপ এর মাধ্যমে

আপনার চ্যানেলের যদি ভালো পরিমাণ সাবস্ক্রাইবার ও ভিউ থাকে, তাহলে বিভিন্ন ব্র্যান্ড আপনার মাধ্যমে তাদের পণ্য বা অ্যাপ প্রমোট করতে আগ্রহী হবে। আপনার চ্যানেলের ভিউ, এনগেজমেন্ট ও টার্গেট অডিয়েন্স অনুযায়ী তারা আপনাকে স্পন্সরশিপ দেবে। এভাবে আপনি প্রতি প্রমোশনে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে মাসে ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি ইনকাম সম্ভব।

৪. কন্টেন্ট লিখে

যদি আপনি লেখালেখিতে দক্ষ হন, তাহলে নির্দিষ্ট একটি ক্যাটাগরি বা নিশ নির্বাচন করে সেখানে নিয়মিত মানসম্মত কন্টেন্ট লিখে পোস্ট করতে পারেন।

আপনার কন্টেন্টগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন যাতে আরও মানুষ আপনার চ্যানেলে আসতে আগ্রহী হয়।
চ্যানেলের ভিউ বাড়লে আপনি মনিটাইজেশন, স্পন্সরশিপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।

৫. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে

আপনি অ্যামাজন বা অন্যান্য অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের প্রোডাক্টের লিংক টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করতে পারেন।
যদি কেউ আপনার শেয়ার করা লিংকের মাধ্যমে প্রোডাক্ট কেনে, আপনি সেই বিক্রয়ের ওপর কমিশন পাবেন। অফার প্রোডাক্ট শেয়ার করলে ক্রেতার আগ্রহ বাড়ে এবং আপনার ইনকামও বাড়ে।

৬. আর্নিং অ্যাপ রেফার করে

বিভিন্ন আর্নিং অ্যাপ যেমন – Ysense, TaskBucks, Meesho ইত্যাদিতে রেফারেল প্রোগ্রাম থাকে। এইসব অ্যাপের রেফারেল লিংক আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করুন।

যারা সেই লিংকে ক্লিক করে অ্যাপটি ডাউনলোড ও ব্যবহার করবে, আপনি প্রতি রেফারেলের জন্য নির্দিষ্ট টাকা পাবেন। ভালো সাবস্ক্রাইবার থাকলে প্রতিদিন ৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় সম্ভব।

৭. ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপে যুক্ত হয়ে – টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম

আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি কোনো স্কিলে দক্ষ হন, তাহলে টেলিগ্রামে থাকা বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপে যুক্ত হয়ে কাজ খুঁজতে পারেন।

নিজের কাজের নমুনা এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করে প্রকৃত ক্লায়েন্ট বা বায়ারদের নজরে আসুন। এভাবে নিয়মিত ফ্রিল্যান্সিং কাজ পেয়ে ইনকাম করা সম্ভব।

আরও পড়ুন  বাজার ও বাজারজাতকরণের মধ্যে পার্থক্য সমূহ

৮. ইউটিউব ভিডিও কন্টেন্ট ও ওয়েবসাইট ব্লগ পোস্ট শেয়ার করে

আপনার যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল বা ব্লগ সাইট থাকে, তাহলে আপনি আপনার ভিডিও এবং ব্লগ পোস্টের লিংক টেলিগ্রাম চ্যানেলে নিয়মিত শেয়ার করতে পারেন।

চ্যানেলের সদস্যরা লিংকে ক্লিক করে আপনার ভিডিও বা ব্লগ দেখলে, ভিউ বাড়বে এবং সেই মাধ্যমে ইনকাম বাড়বে। এই পদ্ধতিতে নিজের অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও ভিজিটর বাড়িয়ে উপার্জন করা যায়।

৯. চ্যানেল বিক্রি করে

আপনার যদি একটি বড় সাবস্ক্রাইবারযুক্ত ও একটিভ টেলিগ্রাম চ্যানেল থাকে, তাহলে আপনি সেটি বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
অনেকে এ ধরনের চ্যানেল কিনতে চায় নিজের বিজনেস বা প্রমোশনের জন্য। আপনি চ্যানেলটি ১০০ ডলার থেকে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত দামে বিক্রি করতে পারেন। এজন্য প্রথমে একটি ভালো মানের চ্যানেল তৈরি করে কয়েক মাস ধরে কন্টেন্ট ও সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে হবে।

সাধারণ প্রশ্ন (FAQ):

1. টেলিগ্রাম থেকে কীভাবে ইনকাম করা যায়?

Ans: মনিটাইজেশন, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, রেফারেল, কন্টেন্ট লেখা, ফ্রিল্যান্সিং, ইউটিউব/ব্লগ শেয়ার, চ্যানেল বিক্রি ইত্যাদি।

2. মনিটাইজেশনের জন্য কতজন সাবস্ক্রাইবার লাগবে?

Ans: অন্তত ১,০০০ জন সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।

3. একাধিক টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলা যাবে কি?

Ans: হ্যাঁ, আপনি একাধিক চ্যানেল খুলতে পারবেন।

4. কতদিনে ইনকাম শুরু হবে?

Ans: এটি নির্ভর করে চ্যানেলের অ্যাক্টিভ সাবস্ক্রাইবার ও কন্টেন্টের মানের উপর। পরিশ্রম ও কনসিস্টেন্সি থাকলে দ্রুত আয় শুরু হতে পারে।

We will be happy to hear your thoughts

Leave a reply

Amar Sikkha
Logo