টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়, ঔষধের নাম

আমাদের মধ্যে অনেকের টাইফয়েড জ্বর হয়েছে আবার অনেকেই এমনি জানতে চায় টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় কী, ঔষধের নাম কী ইত্যাদি। আজকে আমরা আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর।

টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণ দূষিত খাদ্য, পানীয় জল এবং দুধের মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া শরীরের খাদ্যনালিতে প্রবেশ করে। এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এবং জলের মাধ্যমেও এই রোগের জীবাণু ছড়ায়।

টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়

প্রাথমিকভাবে টাইফয়েড জ্বর ভালো করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা জরুরি। তাছাড়াও টাইফয়েড জ্বরের প্রতিকার করার জন্য আরও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন: সব সময় পরিষ্কার পোশাক পরে, নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পান করে টাইফয়েড প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া, অবশ্যই হাত ভালোভাবে ধুতে হবে। ঘরের জিনিসপত্র নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস আলাদা করে রাখতে হবে। পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে।

খাবার গরম করে খেতে হবে। বাইরের খাবার খেলে সব সময় সচেতন থাকতে হবে। অপরিষ্কার শাকসবজি ও কাঁচা-ফলমূল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে কোনোভাবেই যেন টয়লেটে ময়লা বা জল জমে না থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে খোলামেলা ও পরিষ্কার বাসায় রাখতে হবে।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার 

প্রথমে টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ গুলো আমরা জেনে নেই-

টাইফয়েড আক্রান্ত হওয়ার পরও বেশ কিছুদিন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। শুরুর দিকে চাপা অস্বস্তি, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, শরীরময় ব্যথা ইত্যাদি অনুভূত হয়। সাধারণত জ্বর একটু বাড়ে। রোগী প্রলাপ বকতে পারে, এমনকি অচেতনও হতে পারে। ওষুধ চলা অবস্থায়ও সপ্তাহ খানেক জ্বর থাকতে পারে।

  • প্রচন্ড জ্বর  সাধারণত ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হতে পারে
  • মাথাব্যথা ও শরীর প্রচন্ড ব্যথা
  • মাথা ভারী হয়ে যাওয়া
  • শারীরিক দুর্বলতা
  • ক্ষুধামন্দা বা খাওয়ার ইচ্ছা না থাকা
  • ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য
  • বমি-বমি ভাব বা বমি হওয়া
  • শরীরে অলসতা আসা
  • প্রচণ্ড কফ বা কাশি
  • পেটে ব্যথা হওয়া
  • পেটের ওপরের দিকে বা পিঠে লালচে দাগ হতে পারে
  • জ্বরের ২য় সপ্তাহে রোগীর পেটে ও পিঠে গোলাপি রঙের দানা দেখা যাওয়া
  • হার্ট রেট বা হৃদস্পন্দন অনেক কমে যাওয়া
আরও পড়ুন  জেনে নিন সবুজ আঙ্গুর খাওয়ার উপকারিতা

টাইফয়েড জ্বরের প্রতিকার এবং ভালো করার উপায় উপরে দেওয়া হয়েছে দেখে নিন।

টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম

রেজিস্ট্যান্স বা প্রতিরোধক না হলে, ফ্লুরোকুইনোলন যেমন সিপ্রোফ্লক্সাসিন সবচেয়ে কার্যকরি। অন্যথায়, তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন যেমন সেফট্রায়াক্সন বা সেফোট্যাক্সিম কার্যকরি। মুখে খাওয়ার ঔষধের মধ্যে সেফিক্সিম ব্যবহার করা হয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে টাইফয়েড প্রাণঘাতী নয়। টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক যেমন অ্যাম্পিসিলিন, ক্লোরাম্ফেনিকল, অ্যামক্সিসিলিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদি টাইফয়েড চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসায় এ রোগে মৃত্যুর হার ১% এ নেমে আসে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে।টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত

টাইফয়েড হলে শরীরে পানির অভাব দেখা দেয় কারন-এই রোগে ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে রোগীর শরীরে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। তাই বেশি বেশি নরমাল পানি , ডাবের পানি সহ বিভিন্ন ফলের জুস ,শরবত, স্যুপ খেলে পানির ঘাটতি পুরন হয়।

এ জ্বর হলে দুগ্ধজাত খাবার বেশি খাওয়া উচিত কারণ তখন শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে তাই দুধ জাতীয় খাবার খেলে শরীরে শক্তি পাওয়া যাবে, দূর্বলতা কাটতে সাহায্য করবে। লবঙ্গ, তুলসী, গোলমরিচ এগুলা খেতে হবে, কারন লবঙ্গ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তুলসীর ঔষধী গুনাগুন অনেক। তাই টাইফয়েডের ক্ষেত্রে এগুলো অনেক কার্যকরী।

টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীকে কার্বোহাইড্রেড যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে প্রয়োজনে আলু সিদ্ধ ও ভাত খাওয়ানো যেতে পারে।

কার্বোহাইড্রেট জাতিয় খাবার খেলে রোগীর সেগুলি হজম করতে কোনও সমস্যা হয় না, শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পায়। এছাড়াও শুকনো আঙ্গুর খাওয়াতে হবে। শুকনো আঙুর টাইফয়েডের পর শরীর স্বাস্থ্য দ্রুত পুনরুদ্ধারে অত্যন্ত কার্যকরী। রোগীর স্বাস্থ্য দ্রুত আগের অবস্থায় আনার জন্য উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার-দাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। ঘি, মাখন, পিনাট বাটার, মিষ্টি আলু,,দই, খেজুর ইত্যাদি ক্যালরিযুক্ত খাবার, এসব খাবার বেশি খেতে হবে।

আরও পড়ুন  মুখের ডাবল চিন কমানোর উপায়
1 Comment
  1. Reply
    জ্বর সর্দি কাশির এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম - Amar Sikkha August 10, 2024 at 3:54 PM

    […] আরও পড়ুনঃ টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়, ঔষধের ন… […]

Leave a reply

Amar Sikkha
Logo